যোগঃ যোগ কী? (Yoga in Bengali)

যোগ হল জীবনে চলার এক পদ্ধতি।

সংস্কৃত শব্দ ‘যুজ’ থেকে আহরিত যোগ এর অর্থ হল ব্যক্তি সত্তার সঙ্গে বিশ্ব সত্তার মিলন।যোগের জ্ঞান ৫০০০ বছরের পুরানো ভারতীয় জ্ঞান।যদিও অনেকেই মনে করেন যোগ মানে শুধুই শারীরিক কসরৎ, যেখানে জটিল পদ্ধতিতে শরীরটাকে মুচড়িয়ে, ঘুরিয়ে, টেনে ফেলতে হয় এবং কিছু কঠিন শ্বাসের ক্রিয়া করা হয়ে থাকে। এসব কিছু আসলে মানুষের মন ও আত্মার ভেতরে যে অনন্ত শক্তি ও সম্ভাবনা আছে, সেই সম্ভাবনাকে বিকশিত করে তোলবার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকে হালকা করে, ছোট করে দেখা।
এই যোগবিজ্ঞানের মধ্যেই জীবনকে পূর্ণরূপে অতিবাহিত করবার, উপভোগ করবার সারকথা নিহিত আছে। এই যোগ বিজ্ঞানের মধ্যে আছে জ্ঞানযোগ বা জ্ঞানের পথ, ভক্তিযোগ বা পরম শান্তিময় ভক্তির পথ, কর্মযোগ বা পরম আনন্দময় কর্মের পথ এবং রাজযোগ বা মন নিয়ন্ত্রণকারী এক সাধনার পথ। রাজ যোগ আবার ৮ টি ভাগে বিভক্ত। এই নানাবিধ পদ্ধতির সমতা রক্ষা করে, ঐক্যসাধন করে যোগাসন অভ্যাস করাই রাজযোগ পদ্ধতির মূলকথা বা সারকথা।

দি আর্ট অফ লিভিং যোগ:

৩-৫ দিনে বিভক্ত আর্ট </span>অফ<span> লিভিং যোগ ১০ ঘন্টার এমন এক কর্মশালা যা স্বাস্থ্যসম্মত নতুন প্রাণসঞ্চারকারী ও আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। এর মধ্যে কিছু সহজ ও কিছু জটিল যোগের ভঙ্গিমার মিশ্রণ আছে এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের কৌশল আছে, যা শরীর ও মনের ভারসাম্য রক্ষা করে এই দুটিকে একটা সমতায় নিয়ে আসে। এই কর্মশালাটি বহুমাত্রিক। এর প্রাত্যহিক কার্যক্রমের কর্মসূচীতে থাকে যোগের বিভিন্ন দেহভঙ্গি, শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রয়োগকৌশল, যোগ সাধনার জ্ঞান ও ধ্যান। শিক্ষার্থীরা বাড়িতেই এই প্রক্রিয়াগুলি চর্চা করতে সমর্থ হয়। এই যোগ, প্রাথমিক শিক্ষার্থী ও প্রাত্যহিক অভ্যাসকারী-দুয়ের জন্যই এক স্বয়ংসম্পূর্ণ পদ্ধতি এবং যে কোনো বয়সের মানুষের জন্যই বিশেষ উপযোগী।

এই কর্মশালায় শেখা যোগাসন প্রত্যহ অভ্যাস করে অভ্যাসকারীদের জীবনযাত্রায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। মানুষজন দীর্ঘস্হায়ী পুরানো অসুস্হতা থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছে এবং সাথে সাথে বেশ কিছু আচরনগত পরিবর্তনও লক্ষ্য করেছে। অংশগ্রহণকারী ও অভ্যাসকারী উভয়েই বলেছে তারা মনে খুশী অনুভব করেছে, তাদের উৎকন্ঠা কমে গেছে, সহনশীলতার মাত্রা বেড়েছে, মনের বিচার ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে; এবং তারা উপলব্ধি করেছে এই কর্মশালায় শেখা প্রক্রিয়াগুলির মাধ্যমে তাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটেছে।

সবার জন্যই যোগাভ্যাস:

যোগ সাধনার এক বাস্তবোচিত ভালো দিক হল এর শারীরিক কসরৎগুলি বয়স নির্বিশেষে সুস্থ বা দুর্বল যে কোনো ব্যক্তির জন্যই উপকারী ও শক্তিদায়ক; প্রয়োজন শুধু উৎসাহের সাথে অংশগ্রহণ। বয়স বাড়ার সাথে সাথে যোগাসনের সম্বন্ধে আপনার ধ্যান ধারণা ক্রমশ বাড়তে থাকবে ও সূক্ষ্ম হতে থাকবে। যে কোনো যোগাসনের অভ্যাসে মানুষ ধীরে ধীরে তার ভঙ্গিমা, তার বাহ্যিক ঋজুতা ও যান্ত্রিকতাকে অতিক্রম করে তার আভ্যন্তরীণ ক্রিয়ার প্রতি যাত্রা করে ও পরিশেষে যোগাসনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে নিজের সত্তার গভীরে স্থিত হয়।
যোগাসন কখনোই আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া ব্যাপার নয়। যখন আমরা শিশু ছিলাম তখন থেকেই আমরা যোগাভ্যাস করে আসছি; তা সে শিরদাঁড়া সোজা করা ‘ক্যাট স্ট্রেচ’ই হোক বা হজমে সাহায্যকারী বায়ু নির্গমনের দেহভঙ্গিমাই হোক। আমরা দেখি শিশুরা সারাদিনে সবসময়ই কিছু না কিছু যোগভঙ্গিমাতে থাকে।
যোগাভ্যাসের দ্বারা বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়ে থাকে।
"যোগাভ্যাসই জীবনের পথ" - এই সত্যকে উদ্ঘাটনের জন্য আমরা আপনাকে সাহায্য করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

আয়ুর্বেদ : জীবন সম্বন্ধিত বিজ্ঞান:

শারীরিক ও মানসিক স্বাস্হ্যের জন্য আয়ুর্বেদ হল পৃথিবীর সবথেকে শক্তিশালী ও সূক্ষ্ম গভীর জ্ঞানসমন্বিত চিকিৎসা পদ্ধতি।শুধুমাএ কোনো অসুখের নিরাময় পদ্ধতি নয় , আয়ুর্বেদ জীবনের স্ফুরণের বিজ্ঞান। আয়ুর্বেদ এমন এক জ্ঞানের ভান্ডার যা মানুষকে প্রাণবন্ত এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ও তার ভেতরে যে চেতনার পূর্ণ বিকাশ সম্ভব সে কথার উপলব্ধি করায়। এটি ব্যবহৃত হয় প্রকৃতির সহজাত ধর্ম মেনে, যাতে মানুষ তার নিজস্ব দেহ , মন ও আত্মার সাথে প্রকৃতির সঠিক সমতা রক্ষা করে সুস্বাস্হ্য বজায় রাখতে পারে। এমনকি আয়ুর্বেদ চর্চা আপনার যোগ সাধনাকে উন্নত করে প্রকৃত সিদ্ধিলাভের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এই চর্চার ফলে আয়ুর্বেদ সংক্রান্ত বিস্তারিত জ্ঞানের সাথে পরিচয় ঘটে ও কিভাবে স্বাস্থ্যদীপ্ত সুস্থ জীবনযাপন করা যায় তার হদিশ পাওয়া যায়।

শ্বাসের কৌশল (প্রাণায়াম) এবং সমাধি (ধ্যান) :

প্রাণায়াম হল ব্যক্তির নিজস্ব শ্বাসের প্রসারণ ও নিয়ন্ত্রণ। শ্বাসের সঠিক অভ্যাস পদ্ধতির সাহায্যে অনেক বেশী পরিমাণে অক্সিজেন আমাদের রক্তে মেশে ও মস্তিষ্কে পৌঁছায় ও এই ভাবে পরিশেষে আমাদের মূল জীবনী শক্তি বা প্রাণশক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
বিভিন্ন যোগাসনের সাথেসাথে আমরা প্রাণায়ামও অভ্যাস করতে পারি। যোগাসন ও প্রাণায়াম এই দুই যোগ পদ্ধতির সমন্বয়কে মনে করা হয় শরীর ও মনের একত্রিত হয়ে নিয়মানুবর্তিতার পথে চলবার ও বিশুদ্ধিকরণের সর্বশ্রেষ্ঠ পদ্ধতি। প্রাণায়ামের কৌশল আমাদের ধ্যানের গভীরে প্রবেশ করবার জন্য তৈরী করে দেয়।
এই বিভাগে আরও বিভিন্ন ধরনের প্রাণায়াম সম্বন্ধে জানার আছে।

পতঞ্জলি যোগ সূত্র :

এই বিভাগে শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর একান্ত আগ্রহীদের জন্য প্রাচীন শাস্ত্রের, পতঞ্জলি যোগ সূত্রের উপর কথা বলেছেন, যা আপনাকে যোগের জ্ঞান ও সেই জ্ঞানের উৎস এবং উদ্দেশ্যের বিষয়ে আলোকিত করবে। এই যোগসূত্র উপস্হাপনার লক্ষ্য হল যোগসূত্রের মূলনীতি ও সাধনপদ্ধতিকে আরো বেশী সহজসাধ্য ও গ্রহণযোগ্য করে তোলা। শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর প্রতিটি সূত্রকে এমন বাস্তবসম্মত ভাবে ব্যাখ্যা করে উপস্হাপিত করেছেন যাতে যোগসাধনা জীবনযাত্রার অঙ্গ হয়ে ওঠে আর জীবনে তার সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়।

শারীরিক অসুস্হতার জন্য পিছিয়ে পড়ছেন? আপনার আবেগের জন্য ব্যক্তিগত জীবনে এবং কর্মজীবনে কি মাশুল দিতে হচ্ছে? যোগাভ্যাসকে আপনার সঙ্গী করে, সামান্য জীবনধারার পরিবর্তন ঘটিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে আপনার সমস্যার নিষ্পত্তি করতে পারেন – সে বিষয়ে যদি জানতে চান তবে প্রদত্ত দরখাস্ত পূরণ করুন।

Power of Yoga