

গুরুদেব শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর একজন মানবিকতার অগ্রদূত, আধ্যাত্মিক গুরু এবং শান্তির প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর স্বপ্ন একটি উদ্বিগ্নতামুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ সমাজ গঠন করা। এই কাজ তিনি নানান সেবা প্রকল্প এবং আর্ট অব লিভিং-এর বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে একত্রিত করে বাস্তবায়িত করে চলেছেন।
সূত্রপাত
গুরুদেব শ্রী শ্রী রবি শঙ্কর 1956 সালে দক্ষিণ ভারতে জন্মগ্রহণ করেন । ছোটবেলায়ই তিনি ছিলেন অসাধারণ প্রতিভাধর। চার বছর বয়সে তিনি ভগবদ্গীতা-র সংস্কত শ্লোক আবৃত্তি করতে পারতেন এবং শৈশবে প্রায়শই তাঁকে গভীর ধ্যানমগ্ন হয়ে থাকতে দেখা যেত। তাঁর প্রথম শিক্ষক ছিলেন সুধাকর চতুর্বেদী, যিনি মহাত্মা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। 1973 সালে, মাত্র সতেরো বছর বয়সে, গুরুদেব বৈদিক সাহিত্য এবং পদার্থবিজ্ঞান—উভয় বিষয়েই স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।


World Meditation Day
● Livewith Gurudev Sri Sri Ravi Shankar
● Liveat 8:00 pm IST on 21st December
আর্ট অব লিভিং আসলে এক তত্ত্ব, পূর্ণাঙ্গভাবে বেঁচে থাকার দর্শন। এটিকে সংগঠন না বলে বরং বলা উচিত এক আন্দোলন। এর মূল উদ্দেশ্য হলো প্রত্যেকের নিজের ভেতরে শান্তি খুঁজে পাওয়া এবং সমাজের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি, প্রথা, ধর্ম ও জাতীয়তার মানুষদের একত্রিত করা—যাতে আমরা সকলেই উপলব্ধি করতে পারি যে আমাদের একটাই লক্ষ্য, আর তা হলো মানব জীবনের উন্নতি।
- গুরুদেব শ্রী শ্রী রবি শঙ্কর
আর্ট অব লিভিং ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব হিউম্যান ভ্যালুজ এর প্রতিষ্ঠা
একটি আন্তর্জাতিক, অলাভজনক, শিক্ষামূলক এবং মানবতাবাদী সংগঠন হিসেবে গুরুদেব আর্ট অব লিভিং প্রতিষ্ঠা করেন। এর শিক্ষামূলক ও স্ব-উন্নয়নমূলক কর্মসূচিগুলি মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপনের জন্য শক্তিশালী উপায় প্রদান করে এবং সুস্থভাবে,ভালভাবে জীবন কাটানোর অভিজ্ঞতা এনে দেয়। এগুলি কেবলমাত্র নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য নয়, বিশ্বব্যাপী সমাজের সকল স্তরে এই কর্মসূচির কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে 180 টি দেশে আর্ট অব লিভিং কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। 1997 সালে গুরুদেব আর্ট অব লিভিং-এর সহোদর সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান ভ্যালুজ (IAHV) সহ-প্রতিষ্ঠা করেন। IAHV এক মজবুত টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প,এটি মানবীয় মূল্যবোধের বিকাশ এবং সংঘাত নিরসনে কাজ করে।
সেবামূলক কাজে অনুপ্রেরণা ও জ্ঞানের বিশ্বায়ন

মানবিকতার বিশিষ্ট পথপ্রদর্শক গুরুদেবের কর্মসূচিগুলি প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার, সন্ত্রাসী হামলা ও যুদ্ধ থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষ, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশু এবং সংঘাতগ্রস্ত দলগুলিকে সহায়তা প্রদান করেছে। তাঁর বার্তার শক্তি লক্ষাধিক স্বেচ্ছাসেবককে আধ্যাত্মিকতার ভিত্তিতে সেবামূলক কাজে অনুপ্রাণিত করেছে।
আধ্যাত্মিক গুরু হিসেবে তিনি যোগ ও ধ্যানের ঐতিহ্যকে নবরূপ দান করেছেন এবং ২১শ শতকের মানুষের জন্য সহজ ও প্রাসঙ্গিক রূপে উপস্থাপন করেছেন। প্রাচীন জ্ঞানকে পুনরুজ্জীবিত করার পাশাপাশি গুরুদেব ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিবর্তনের জন্য নতুন কৌশলও সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো সুদর্শন ক্রিয়া, যা লক্ষ লক্ষ মানুষকে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দিয়েছে এবং তাদের ভেতরের যে অপরিমেয় শক্তি আছে নীরবতার ভান্ডারে,দৈনন্দিন জীবনে তাকে খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে।
শান্তির অগ্রদূত

শান্তির দূত হিসেবে গুরুদেব বিশ্বজুড়ে সংঘাত নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি তাঁর হিংসামুক্ত সমাজের আদর্শ , দূরদৃষ্টি ও স্বপ্নের কথা বিশ্বের বিভিন্ন জনসমাবেশে ,আন্তর্জাতিক ফোরামে বিনামূল্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন। নিরপেক্ষ শান্তিপ্রেমী হিসেবে তিনি কলম্বিয়া, ইরাক, আইভরি কোস্ট, কাশ্মীর ও বিহারে, বিরুদ্ধ মতাদর্শী বৈরী পক্ষগুলিকে আলোচনার টেবিলে আনতে বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। তাঁর উদ্যোগ, প্রথম পদক্ষেপ ও বক্তৃতার মাধ্যমে গুরুদেব নিরন্তর মানবীয় মূল্যবোধ জোরদার করবার ওপর এবং এই কথা উপলব্ধি করার ওপর জোর দিয়েছেন যে আমরা সবাই এক বিশ্ব পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। ধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধি ও বহুসাংস্কৃতিক শিক্ষার প্রচার - এই দুটিকে গুরুদেব উগ্রবাদ নিরসনের অন্যতম কার্যকর উপায় হিসেবে তিনি তুলে ধরেছেন।
মানবিক মূল্যবোধ ও সেবার ভাবের পুনর্জাগরণের মাধ্যমে গুরুদেব সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জীবনকে স্পর্শ করেছেন। জাতি, ধর্ম, জাতীয়তার সীমা ছাড়িয়ে তিনি মানসিক চাপ মুক্ত ও সন্ত্রাসমুক্ত সারা বিশ্বময় একটাই পরিবারের আদর্শ বিশ্নববাসীর মনে নতুনভাবে জাগিয়ে তুলেছেন।