মানসিক চাপ

চাপ বিহীন মন আমাদের প্রত্যেকের একটি জন্মগত অধিকার

আমাদের চিন্তা, অনুভব এবং ব্যবহারের ধরণের উপর উৎকন্ঠা প্রভাব ফেলে, এইভাবে জীবনের বিভিন্ন দিককে প্রভাবান্বিত করে তোলে। উদ্বেগকে প্রশ্রয় দেওয়ার ফল স্বরূপ বিপর্যয়কারী পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তথাপি মানুষ এটিকে দূর করতে অক্ষম হয়। বুদ্ধির বিচারে আপনি জানেন, "আমার দুঃখিত হওয়া উচিত নয়, আমার বিরক্ত হওয়া উচিত নয় । আমার বিরক্ত হওয়া উচিত নয়।" কিন্তু ব্যবহারিক জীবনে এটি বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয় না। যখন সেই মুহূর্তটি আসে , নেতিবাচক চিন্তা বন্যার মত ধেয়ে এসে আপনাকে বশীভূত করে ফেলে এবং আপনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।

কিভাবে উদ্বেগের সাথে মোকাবেলা করা যায় তা কোন বিদ্যালয় বা কোন গৃহেই শিক্ষা দেওয়া হয় না। এইখানেই সুদর্শন ক্রিয়া চমৎকার ভাবে সাহায্য করে। আপনার আবেগের বন্যাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক হয়। এটি আপনার মধ্যে নিহিত একটি স্বয়ংকারী প্রক্রিয়া যেটি অব্যাহত ভাবে আপনার নেতিবাচক অনুভূতিগুলিকে সহজেই জয় করতে সাহায্য করে।

উদ্বেগ সম্পর্কে নিগুঢ় সত্যতা

বাইসাইকেল চড়ার রহস্যটি কি? সমতা! এটির অর্থ কেন্দ্রস্থলে থাকা। ডান অথবা বাঁ কোন দিকেই পড়তে না দেওয়া। যখনই কোন একদিকে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় আপনি এটির ভারসাম্য ফিরিয়ে আনেন। যখনই আপনি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তখনই কষ্টভোগ করতে হয়। এই বিষয়টিকে উপেক্ষা না করে এটির প্রতি মনোনিবেশ করুন। এটিকে স্বীকার করে কেন্দ্রীভূত হউন।

icon

নেতিবাচকতার উৎস

নেতিবাচক কিভাবে উদ্ভূত হয় এই ব্যাপারে আপনি কখনো কি বিস্ময় বোধ করেছেন? নেতিবাচক চিন্তার উৎস গুলি অনুধাবন করলে আপনি উপলব্ধি করবেন যে উৎকন্ঠা ও উদ্বেগই এগুলির কারণ। একজন নিরুদ্বেগ এবং সুখী মানুষ কখনো নেতিবাচক চিন্তা করেন না। কোন ব্যক্তি যত অসুখী হবেন ততোধিক নেতিবাচক চিন্তায় আক্রান্ত হবেন।

icon

প্রেরণা প্রদানকারী নয়

উৎকন্ঠা বা উদ্বেগ কোন ব্যক্তির অধিক কর্মক্ষমতা অথবা সৃজনশীলতার অনুপ্রেরণা হতে পারে না। মানুষ সাধারণত বলে থাকেন - প্রয়োজনীয়তাই সৃষ্টির জননী। আফগানিস্তান, লেবানন অথবা বেইরুট যে দেশগুলি অত্যন্ত চাপ এবং উদ্বীগ্নতার মধ্যে রয়েছে সে দেশগুলিতে বিগত চল্লিশ বছরে কিন্তু কোন উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার হতে দেখা যায়নি।

icon

অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে অতিরিক্ত মনোসংযোগ

বৃহতের দিকে মনকে সন্নিবিষ্ট না করে যখন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ের প্রতি, অপ্রয়োজনীয় বিষয়ের প্রতি মন নিবদ্ধ হয় , তখনই উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। এগুলি সবই পরিবর্তনশীল। আপনি সেগুলিকেই ধরে রেখে বিচলিত হয়ে পড়ছেন যেগুলি সর্বদা পরিবর্তিত হয়ে চলেছে।

সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম

ধ্যান আপনাকে দক্ষ ও সক্রিয়, নিরুদ্বেগ এবং আনন্দিত করে তুলবে।

স্বল্প সময়ের মধ্যে যখন অধিক কাজ করতে হয় তখনই উদ্বীগ্নতার সৃষ্টি হয় এবং উৎসাহ হ্রাস পায়। হয় আপনি কাজের চাপ কমিয়ে দিন , যেটি এখনকার দিনে সম্ভব হয়না, নতুবা সময়সীমা বাড়িয়ে দিন। সেটিও করা সম্ভব হয়না। আপনি যখন ক্লান্ত, তখন নিজেকে সুস্থ করার জন্য অধিক সময় প্রাপ্ত করতে চান। সুতরাং দৃশ্যতঃ একমাত্র বিকল্প রয়েছে আপনার কাছে সেটি হ'ল আপনার কর্মশক্তিকে বৃদ্ধি করা।

- গুরুদেব শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর

উদ্বীগ্নতা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি?

আপনার কর্মশক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারলেই বিনা প্রয়াসেই উদ্বেগ থেকে মুক্তি পাবেন।

Gurudev Sri Sri Ravi Shankar

পরিমিত ভোজন

অধিক মাত্রায়ও নয়, অত্যাধিক কম মাত্রাও নয়, যথেষ্ট পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন সমন্বিত সুষম খাদ্য।

youth programs

সঠিক মাত্রায় নিদ্রা

ছ' থেকে আট ঘণ্টা নিদ্রা, এর বেশীও নয় কমও নয়।

meditation during happiness program

শ্বাসক্রিয়া

কিছু গভীর শ্বাস প্রক্রিয়ার অভ্যাস আপনার কর্মক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।

meditation during happiness program

ধ্যান

কিছু সময়ের জন্য ধ্যানের অভ্যাস আপনাকে সবরকম উৎকন্ঠা থেকে মুক্তি দিতে পারে। ধ্যান আপনাকে দক্ষ এবং কর্মোদ্যম, নিরুদ্বেগ ও আনন্দিত করে তোলে।

উদ্বেগ ব্যতিরেকে সাফল্য অর্জন

বাইসাইকেল চালানোর রহস্যটি কি ? সমতা রক্ষা করা! অর্থাৎ কেন্দ্রে স্থিত থাকা : ডান অথবা বাম কোন দিকেই পতিত হতে না দেওয়া। একদিকে যখন এটি পড়ে যায় আপনি ভারসাম্য ফিরিয়ে আনেন, যখন আপনি ভারসাম্য থেকে বিচ্যুত হ'ন তখন আঘাত প্রাপ্ত করেন। এইটি অনুধাবন করুন। উপেক্ষা না করে এটিকে গ্রহণ করে কেন্দ্রীভূত হোন।

icon

ভারসাম্য বজায় রাখুন

আপনার কাজ এবং নিজেকে সঞ্জীবিত রাখা এই দুটির মধ্যে সময়ের সন্তোলন করুন। আহারের প্রতি যত্নশীল হোন, ব্যায়াম করুন এবং ধ্যান ও বিশ্রামের জন্য নির্ধারণ করুন।

icon

শিল্পকলার প্রতি আগ্রহী হ'ন

বাম মস্তিষ্ক ও ডান মস্তিষ্কের কার্যকারিতার মধ্যে সমতা রক্ষার জন্য অঙ্কন, সঙ্গীত, কবিতা অথবা আরো বিভিন্ন প্রকারের সৃজনাত্মক ও বিনোদনমূলক কার্যে নিজেকে সক্রিয় করে তুলুন।

icon

সামাজিক কার্যে অংশগ্রহণ করুন

আপনার আশেপাশের মানুষ জনের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ান। আপনি যখন কোন সামাজিক এবং সেবামূলক কাজে জড়িত হবেন তৎক্ষণাৎ আপনার অন্তঃস্থল থেকে শক্তি সঞ্চার করবেন।

সাফল্য অর্জনের রহস্য হ'ল জীবনের বিভিন্ন দিক গুলির প্রতি আসক্ত না হয়ে এবং বিরূপতা না দেখিয়ে সমতা রক্ষা করে চলা।