উদ্বেগ আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও পেশাগত জীবনকে বাধাগ্রস্ত করে এবং বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে। এবং এই দুশ্চিন্তা শরীরে অন্যান্য অনেক সমস্যার মূল কারণ। উদাহরণস্বরূপ, তোমার শরীরে কাঁপুনিতে প্রাথমিকভাবে মুখ ঘেমে যাওয়া, মুখ শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি l এই উপসর্গ গুলোর থেকে ভবিষ্যতে কোষ্ঠকাঠিন্য, বুকে ব্যথা এবং অনিদ্রাও হতে পারে l স্পষ্টতই, উদ্বেগের উপসর্গের পরিসর তরিৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রের মতো অনেকটাই বিস্তৃত।
যাইহোক, উপসর্গের এই বিস্তৃত বর্ণালীর মূলের একটি হল শরীরে বাতের বা বায়ু উপাদানের ভারসাম্যহীনতা।
শরীরে দোষের ভারসাম্য বজায় রাখতে, আমাদের এমন খাদ্যগ্রহণ করতে হবে এবং জীবনধারা মেনে চলতে হবে যার গুণাবলী হবে নির্দিষ্ট সেই দোষের বিপরীতে। বাত দোষে হালকা, শীতল, শুষ্ক এবং রুক্ষ ভাব বৃদ্ধি পায়। তাই ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে খাদ্যতালিকা ও জীবনযাত্রায় এমন পরিবর্তন আনতে হবে যাতে উষ্ণ, ভারী এবং তৈলাক্ত ভাবের বৃদ্ধি ঘটে।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত উদ্বেগ মোচনের উপায়
উপরোক্ত নীতিটা অনায়াসেই বাস্তবায়িত করা যেতে পারে সহজ প্রতিবিধানের মাধ্যমে l উদ্বেগের প্রতিকারের জন্য আয়ুর্বেদিক নিয়মগুলি নিম্নরূপ:
-
বাত দোষ উপশমকারী খাদ্য গ্রহণ করুন
দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় মিষ্টি, নোনতা এবং টক স্বাদযুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। কষা, তেতো এবং ঝাল এড়িয়ে চলুন। মিষ্টি বলতে আমরা বোঝাই প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি যেমন ফলমূল, মধু ইত্যাদি l চিনিযুক্ত, ঠান্ডা এবং শুকনো খাবারের পরিবর্তে উষ্ণ, তৈলাক্ত এবং আর্দ্র খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।
-
আয়ুর্বেদিক ওষুধ সেবনের মাধ্যমে দেহতন্ত্রকে শান্ত ও শীতল করুন
অশ্বগন্ধা, শঙ্খপুষ্পী এবং ব্রাহ্মীর মতো ওষুধগুলো স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে এবং মস্তিষ্ককে বিষমুক্ত করেl যদিও আয়ুর্বেদীয় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই ওষধি সেবন করা উচিত নয়। একজন আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসক শরীরের গঠনের উপর ভিত্তি করে ওষুধের পরামর্শ দেন। উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ পেতে দয়া করে একজন শ্রী শ্রী আয়ুর্বেদীয় ডাক্তারের পরামর্শ নিনl
-
একটি বিশেষ আয়ুর্বেদিক ম্যাসেজ নিন
শীলা অভ্যঙ্গ একটা গভীর প্রশান্তিদায়ক আয়ুর্বেদীয় ম্যাসাজ যা দেহকে গভীর বিশ্রাম দেয়। এতে বিশেষ আয়ুর্বেদীয় তেল এবং গরমজলে ফোটানো ব্যাসল্ট পাথর ব্যবহার করা হয়। এই পাথরগুলোর উষ্ণতা বাত দোষের প্রতিকার করতে সহায়তা করে এবং শরীর ও মনে প্রশান্তি ফিরিয়ে আনে।
-
নিয়মিত রুটিন মেনে চলুন
বাত দোষকে সমতায় আনার জন্য একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী মেনে ঘুম থেকে উঠুন, খাবার খান এবং ঘুমাতে যান। এই ছন্দময় জীবনযাপন আপনার শরীর ও মনকে সঠিক ভারসাম্যে রাখতে সাহায্য করবে।
-
যোগ, প্রাণায়াম ও ধ্যান করুন
এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে যোগব্যায়াম, প্রাণায়াম (শ্বাসনিয়ন্ত্রণ) এবং ধ্যান উদ্বেগ কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী । প্রতিদিন কিছুটা সময় এই প্রাচীন বিষয়গুলো চর্চা করার জন্য বরাদ্দ করুন। এগুলোর অভ্যাস আপনাকে শুধু শান্তই রাখবে না, বরং আপনার মনোযোগ ও দক্ষতাও বাড়াবে।
এই শক্তিশালী কৌশলগুলো শিখতে আপনি আপনার নিকটবর্তী কোনো জায়গায় শ্রী শ্রী যোগ বা হ্যাপিনেস প্রোগ্রামের মতো কোনও কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারেন, যেখানে আপনাকে সঠিক এবং সার্বিক পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।











