যেকোনও নতুন শারীরিক ব্যায়াম বা যোগাসন শুরু করার আগে সবসময় আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন।
1. চক্রবকাসন
কিভাবে করব?
- হাত ও হাঁটুর উপর ভর করে শুরু করতে হবে এবং মেরুদণ্ডকে বিশ্রামে রাখতে হবে। শ্বাস নিয়ে সকল মাংসপেশি প্রসারিত করে পেটকে ভেতরে ঢোকাতে হবে। এটা হলো কাউ-পোজ বা বিটিলাসন।
- উপরের দিকে তাকিয়ে কাঁধকে তুলে পেছনে সরিয়ে সোজা তাকাতে হবে। ধীরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মেরুদণ্ডকে বেড়ালের মতো উঁচু করে কক্সিক্সকে আরাম দিতে হবে।
- বিশ্রাম নিতে নিতে ধীরে মাথাটা মেঝেতে নামিয়ে আনতে হবে।
উপকারিতা
- পিঠের দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা উপশমে এবং মানসিক চাপ কমাতে ভীষণ সাহায্য করে।
2. সেতু বন্ধাসন

কিভাবে করব?
- চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করতে হবে। নিতম্বের বেড়ের ব্যবধানে দুপায়ের পাতা মেঝেতে রাখতে হবে।
- দেহের দুপাশে দুটো হাত লম্বা করে হাতের তালু মেঝেতে রাখতে হবে।
- শ্বাস নিতে নিতে ধীরে ধীরে শরীরের নিচের অংশ উপরের দিকে উঠাতে হবে এবং দুই হাঁটুর মধ্যে নিতম্বের বেড়ের ব্যবধান থাকবে।
- কাঁধকে নিচে চেপে রেখে চিবুকটাকে বুকে স্পর্শ করানোর চেষ্টা করতে হবে এবং একইসঙ্গে নিতম্বকে শক্ত করতে হবে।
- পায়ের সাহায্যে নিতম্বকে উপরে উঠাতে হবে এবং উপরের দিকে বুক চিতিয়ে মেঝেতে মাথাটাকে রাখতে হবে।
- 30-40 সেকেন্ড এই ভঙ্গিতে থেকে ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে।
- শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে দেহকে আলগোছে নামিয়ে এনে মাটিতে চিৎ হয়ে শুতে হবে।
- কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করতে হবে এবং ঘাড়ে ব্যথা থাকলে না করাই বাঞ্ছনীয়।
উপকারিতা
- পিঠের ব্যথা, দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ ও অনিদ্রার চিকিৎসা করে।
- দেহের মূল শক্তি বাড়ায় এবং পা ও মেরুদণ্ডে নমনীয়তা ও শক্তি আনে।
3. বালাসন

কিভাবে করব?
- মাটিতে হাঁটু মুড়ে সোজা হয়ে বসে নিতম্বকে দুপায়ের গোড়ালির উপরে রাখতে হবে।
- দুহাত উপরে তুলে ধীরে ধীরে দেহকে সামনের দিকে ঝুঁকাতে হবে।
- হাত দুটো মাটিতে এনে চেষ্টা করতে হবে যাতে বুক হাঁটুকে স্পর্শ করতে পারে এবং মাথা মাটিতে রাখতে হবে।
- এই অবস্থায় 30 সেকেন্ড থাকতে হবে।
- ধীরে আবার সোজা হয়ে গোড়ালির উপর বসতে হবে এবং 4-5 বার পুনরাবৃত্তি করতে হবে।
উপকারিতা
- মানসিক চাপ উপশম করে এবং পেশিকে টানমুক্ত করে আরাম দেয়।
- আদর্শ ভঙ্গির জন্য দারুন। রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং দেহকে নমনীয় করে তোলে।
4. বিপরীত করণি
কিভাবে করব?
- দেয়াল ঘেঁষে মাটিতে বসতে হবে।
- মাটিতে চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু সোজা রেখে পাদুটোকে দেয়ালে তুলে দিতে হবে।
- নিতম্ব মাটিতে থাকতে পারে বা দেয়াল স্পর্শ করতে পারে।
- দুহাত দেহের দুপাশে মাটিতে লম্বা থাকবে এবং এইভাবে ১৩ মিনিট থাকতে হবে।
উপকারিতা
- যদিও এটা একটা সহজ ভঙ্গিমা, মস্তিষ্কে রক্তসঞ্চালনে কিন্তু খুবই সাহায্য করে।
- এটা মানসিক চাপ কমায় এবং উদ্বেগ, বিষণ্ণতা,উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যা নিরামযে সহায়তা করে।
5. সূর্য নমস্কার (1-4 ধাপ)
কিভাবে করব?
সূর্য নমস্কার একটা 12 ধাপের যোগ যা দেহের মূল পেশিসমূহকে শক্তিশালী করে, চাপ মুক্ত করে, অনিদ্রার চিকিৎসা করে, দেহে নমনীয়তা আনে এবং মেরুদণ্ডকে প্রসারিত করে। এখানে প্রথম চারটে ধাপের কথা বলা হবে।
- সোজা হয়ে দুপায়ের মধ্যে ব্যবধান রেখে দাঁড়াতে হবে ।হাতদুটো দেহের দুপাশে থাকবে এবং হাতের তালু ভেতরের দিকে থাকবে।
- ধীরে হাতদুটো জোড় করে বুকের কাছে এনে শ্বাস নিয়ে, হাতের তালু সামনের দিকে খোলা রেখে, হাত দুটোকে সামনের দিকে উপরে নিতে হবে।
- হাতদুটো মাথার উপরে নিয়ে যতটা সম্ভব পেছনের দিকে ঝুঁকতে হবে।
- কয়েক সেকেন্ড এই অবস্থায় থেকে ধীরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাতের সঙ্গে দেহের উপরের অংশকে নিচে নামাতে হবে।
- মাটিকে স্পর্শ করে এই অবস্থায় কয়েক সেকেন্ড থেকে পূর্বের দাঁড়ানো অবস্থায় ফিরে আসতে হবে।
উপকারিতা
- এটা উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমানোর একটা অন্যতম শ্রেষ্ঠ শান্তিদায়ক ব্যায়াম, কারণ এটা বুককে প্রসারিত করে শ্বাস-প্রশ্বাসকে সহজ করে তোলে।
- প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করে।