60 বছরের বেশি বয়স্কদের জন্যই কি ধ‍্যান নয় ?

ধ্যান আমাদের জীবনে যে সকল উপকার নিয়ে আসে তা দেখলে বোঝা যায় যে এটি আরও প্রাসঙ্গিক। প্রাচীনকালে, ধ্যানকে আত্মার সন্ধান ও আলোকপ্রাপ্তির পথ হিসেবে প্রয়োগ করা হতো। ধ্যান দুঃখ ও সমস্যার থেকে উত্তরণের একটি উপায় ছিল। এটি নিজের ক্ষমতা বিকাশের মাধ্যমও ছিল।
আপনি চাইলে আলোকপ্রাপ্তিকে একপাশে সরিয়ে রাখুন। আজকের সমাজে ক্রমবর্ধমান চাপ ও উত্তেজনার ক্ষেত্রে ধ্যান অপরিহার্য। যত বেশি দায়িত্ব আপনি গ্রহণ করবেন, তত বেশি ধ্যান প্রয়োজন। আপনার দায়িত্ব ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা যত বড়, ধ্যানের প্রয়োজন তত বেশি।

যদি আপনার কিছু করার না থাকে, তবে ধ্যানের প্রয়োজন তত বেশি নাও হতে পারে। কিন্তু আপনি যত বেশি ব্যস্ত থাকবেন, সময় কম থাকবে, ইচ্ছা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা যত বেশি থাকবে—তত বেশি ধ্যানের প্রয়োজন। কারণ ধ্যান যে কেবল চাপ ও ক্লান্তি দূর করে তাই নয়, এটা আপনার সক্ষমতাও বৃদ্ধি করে, স্নায়ুতন্ত্র ও মনকে শক্তিশালী করে। ধ্যান যে কেবল মানসিক চাপ ও উত্তেজনা দূর করে , শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে মনকে শান্ত করে তাই নয়, এটা আপনাকে আরও সক্ষম করে তোলে, প্রতিটি দিক থেকে উন্নত করে। আর কি চাই? যদি আপনি সুখী ও সুস্থ থাকতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই ধ্যান করতে হবে!

আমার যথেষ্ট নমনীয়তা নেই

দ্য আর্ট অফ লিভিং-এর কোর্সের উপকার পাওয়ার জন্য আপনার মাথার উপর দাঁড়ানোর ক্ষমতা থাকার প্রয়োজন নেই!

আমাদের প্রোগ্রামে শেখানো শ্বাসপ্রশ্বাস ও ধ্যান কৌশলগুলো করার জন্য কোনো বিশেষ শারীরিক দক্ষতার দরকার নেই। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ পাঁচ থেকে নব্বই বছরের মধ্যে যে কোনো বয়সে এগুলো অনুশীলন করে থাকেন !

আমি এখন ব‍্যস্ত

আপনি এখন ব্যস্ত, কিন্তু আপনি কখন সুখী হবেন? আনন্দ শুধুমাত্র বর্তমান মুহূর্তেই পাওয়া যায়। তবুও আমরা মনকে সাধারণত অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যেই দুলতে দেখি। আমরা যা ঘটেছে তার জন্য দুঃখিত বা রাগান্বিত হই, অথবা , ভবিষ্যতের ফলাফলের জন্য উদ্বিগ্ন হই ।আপনার মনটি পর্যবেক্ষণ করুন। যদি লক্ষ্য করেন, দেখবেন আপনি ভালো জিনিসগুলোকে স্থগিত রাখেন, কিন্তু নেতিবাচক জিনিসগুলোকে কখনো নয়। আপনি কখনো বলেন না, ‘আমি আমার রাগকে স্থগিত রাখব।’ বলেন কি? আপনি আপনার সুখকে কোনো নিখুঁত ভবিষ্যতের জন্য স্থগিত রাখেন, কিন্তু তা কখনো আসে না। যদি আপনি জীবনকে এখনই উপভোগ করেন, তাহলে আগামীকাল নিজে নিজেই ঠিক চলবে। এটাই হলো দ‍্য আর্ট অফ লিভিং ।

এই কর্মশালাগুলো কে সৃষ্টি করেছেন?

‘সুদর্শন ক্রিয়ার‘ জন্ম হয় ১৯৮২ সালে ভারতের শিমোগায়, যখন গুরুদেব শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর, যিনি বর্তমানে একজন বিশ্বমানবদরদী আধ্যাত্মিক গুরু, দশ দিনের নীরবতায় প্রবেশ করেন। তাঁর নিজের ভাষায়: “আমি তখন ইতিমধ্যেই সারা পৃথিবী ভ্রমণ করেছি। আমি যোগ ও ধ্যান শিখিয়েছি। কিন্তু তারপরও ভাবছিলাম কিভাবে মানুষকে সুখী জীবন যাপন করতে সাহায্য করা যায়। আমার মনে হচ্ছিল কিছু একটা অভাব রয়ে গেছে। যদিও মানুষ নিয়মিত অনুশীলন করে, কিন্তু বাস্তব জীবনে ফিরে এলে তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন মানুষ হয়ে যায়, তাদের জীবন খণ্ডিত হয়ে যায় । তাই আমি ভাবছিলাম কিভাবে এই ফাঁকটিকে পূরণ করা যায়—অন্তরের নীরবতা আর বাইরের জীবনের প্রকাশের মধ্যে। দশ দিনের নীরবতার সময়ে, ‘সুদর্শন ক্রিয়া‘ যেন এক অনুপ্রেরণার মতো উদ্ভাসিত হয়েছিল। প্রকৃতি জানে কি দিতে হবে এবং কখন দিতে হবে। নীরবতা থেকে বেরিয়ে আসার পর, আমি যা জানতাম তাই শেখাতে শুরু করলাম এবং প্মানুষ অসাধারণ অভিজ্ঞতা লাভ করল।” ~ গুরুদেব শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর সেই সময় থেকে, সুদর্শন ক্রিয়া একটা শক্তিশালী, ছন্দোময় শ্বাসপ্রশ্বাসের কৌশল— যা ‘আর্ট অফ লিভিং’-এর সব কোর্সের মূলভিত্তি হয়ে উঠেছে। প্রথম কোর্সটি গুরুদেব শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর স্বয়ং শিমোগায় পরিচালনা করেন। গত চার দশকে গুরুদেব শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর প্রাচীন জ্ঞানকে আধুনিক জীবনের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন এবং কোটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে যোগ, প্রাণায়াম ও ধ্যানকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

আমি কত দ্রুত এর ফলাফল দেখতে পাব?

‘দ‍্য আর্ট অফ লিভিং’-এর কোর্সগুলোর মূলভিত্তি একটা কৌশল, যার নাম সুদর্শন ক্রিয়া । সুদর্শন মানে হলো নিজের প্রকৃত সত্তাকে সঠিকভাবে দেখা। আর ক্রিয়া অর্থ হলো শুদ্ধিকরণের কাজ। এটা মনের গভীরে এক অদ্ভুত প্রশান্তি আনে, আর শরীরের প্রতিটি কোষ শক্তিতে উদ্ভাসিত হয়। এই শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া শক্তিশালীভাবে চাপ ও দুশ্চিন্তা দূর করে। মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই, প্রথম অনুশীলনের পর আপনি অনুভব করবেন কিভাবে মন, শক্তি এবং অক্সিজেন আপনার শরীরের প্রতিটি কোষের গভীরে প্রবেশ করছে এবং আপনাকে ভেতর থেকে গভীরভাবে শুদ্ধ করছে। আপনার শরীরের প্রতিটি কোষ শুদ্ধ হয়, নবজীবন পায় এবং অক্সিজেনের সঞ্চারে আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন যে নেতিবাচক চিন্তা কিভাবে জন্ম নেয়? যদি আপনি নেতিবাচক চিন্তার উৎসের দিকে মন দেন, তবে বুঝবেন যে এগুলো আসে চাপ এবং দুশ্চিন্তা থেকে। একজন প্রশান্ত ও সুখী মানুষ নেতিবাচক চিন্তা করে না। দেখলেন তো? মানুষ যত বেশি দুঃখ-কষ্টে থাকে, তত বেশি নেতিবাচক চিন্তা আসে। মনকে ইতিবাচক চিন্তায় ডুবিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে নিজের গভীরে যান—শ্বাসপ্রশ্বাস ও ধ্যানের মাধ্যমে—এবং সমগ্র মন ও দেহতন্ত্রকে শুদ্ধ করুন। মূল উৎসে যান, কারণকে দূর করুন, নেতিবাচকতার মূলটিকে উপড়ে ফেলুন। এতে খুব বেশি সময় লাগে না। বিশেষ করে সুদর্শন ক্রিয়ার মাধ্যমে এটি একেবারেই তাৎক্ষণিক। মাত্র দুই দিনের অনুশীলন—প্রতিদিন এক ঘণ্টা—শরীরকে গভীরভাবে শুদ্ধ করে, আপনাকে করে তোলে অনেক সতেজ ও হালকা।

আপনারা কেন মূল‍্য ধার্য করেন?

‘দ‍্য আর্ট অফ লিভিং’-এর কোর্সগুলো মোটেও ব্যয়বহুল নয়। কোর্স আয়োজন করতে কিছু খরচ হয়—যেমন স্বেচ্ছাসেবকদের হল ভাড়া নিতে হয়, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জোগাড় করতে হয়। তাই কোর্স ফি-এর একটি অংশ এসব খরচে ব্যবহৃত হয়। বাকি অর্থ সারা ভারতে বিভিন্ন সেবামূলক প্রকল্পে ব্যয় করা হয়। আরেকটা কারণ হলো, যদি কোর্সটা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হয়, মানুষ সেটাকে মূল্য দেয় না। তারা দায়িত্ব নিয়ে বসে শেখে না।